ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ , ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৯৭৭ সালে প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের সময়ে পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ পানামার হাতে দেওয়া হয়।

পানামা খাল কেড়ে নেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের

ডেস্ক রিপোর্ট
আপলোড সময় : ২২-১২-২০২৪ ০৬:০৪:১২ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ২২-১২-২০২৪ ০৬:০৪:১২ অপরাহ্ন
পানামা খাল কেড়ে নেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের

facebook sharing buttonmessenger sharing buttonwhatsapp sharing buttontwitter sharing buttonlinkedin sharing buttoncopy sharing buttonprint sharing button
অ- অ+
 ছবি : সংগৃহীত
X
১৯৭৭ সালে প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারের সময়ে পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ পানামার হাতে দেওয়া হয়। ছবি : সংগৃহীত

নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ ওয়াশিংটনের কাছে ফিরে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। তার মতে, এই খালের মাধ্যমে মার্কিন জাহাজগুলোর যাতায়াতে অতিরিক্ত শুল্ক ও মাশুল দিতে হচ্ছে, যা অত্যন্ত অন্যায্য এবং অবিচার।

ট্রাম্প এসব শুল্ক ও ফির তীব্র সমালোচনা করে বলেন, পানামা খালের নিয়ন্ত্রণের অধিকার ফিরিয়ে নেওয়া হবে যদি এই অনাচার অব্যাহত থাকে। রোববার (২২ ডিসেম্বর) এ তথ্য প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি।


শনিবার (২১ ডিসেম্বর) এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প বলেন, আমাদের নৌবাহিনী এবং বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর সঙ্গে অত্যন্ত অন্যায় আচরণ করা হয়েছে। পানামা খাল যে ধরনের ফি নিচ্ছে তা হাস্যকর এবং অবিচার। এই পরিস্থিতি আর চলতে দেওয়া হবে না। তিনি আরও যোগ করেন, আমরা আমাদের দেশের স্বার্থে শিগগিরই ব্যবস্থা নেব।

ট্রাম্প শনিবার পানামা খালকে ঘিরে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এই খালটি আটলান্টিক এবং প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্য দিয়ে মালামাল পরিবহনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এর নিয়ন্ত্রণ পানামার হাতে থাকা সত্ত্বেও চীনের প্রভাব এখানে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আমাদের জন্য উদ্বেগের বিষয়।

উল্লেখ্য, ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র পানামা খালের নির্মাণকাজ শেষ করে। এই খালটি দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকা, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

১৯৭৭ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার প্রশাসনের সময় পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ পানামার হাতে তুলে দেওয়া হয়, যা ১৯৯৯ সালে সম্পূর্ণভাবে পানামার হাতে চলে যায়।

পানামা খাল আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, বিশেষ করে এশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের মধ্যে মালামাল পরিবহনে এটি একটি প্রধান সেতু হিসেবে কাজ করে।

এই খালটির মাধ্যমে জাহাজগুলো দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণ প্রান্ত ঘুরে যাওয়ার দীর্ঘ পথ এড়িয়ে দ্রুতভাবে মহাদেশ দুটির মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে।

ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ‘ট্রুথ সোশাল’-এ মন্তব্য করেছেন যে, পানামা খালের নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সম্পূর্ণ পানামার। চীন বা অন্য কোনো দেশের নয়। আমরা কখনোই এর নিয়ন্ত্রণ ভুল মানুষের হাতে যেতে দেব না। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, পানামা খালের নিরাপদ, উপযোগী এবং নির্ভরযোগ্য কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

ট্রাম্প আরও বলেন, অন্যথায়, বিনা বাক্যব্যয়ে এই খালের নিয়ন্ত্রণ ওয়াশিংটনের কাছে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। তিনি একে ‘একটি নির্বোধ সিদ্ধান্ত’ বলে আখ্যায়িত করেন, যে সিদ্ধান্ত ১৯৭৭ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার নিয়েছিলেন, যখন পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ পানামার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল।

পানামা খাল বিশ্বের বৈশ্বিক নৌপরিবহনের প্রায় ৫ শতাংশ পরিচালনা করে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং অন্যান্য দেশ এই খালকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করে। এর মাধ্যমে এই দেশের মধ্যে সোজা নৌপথ তৈরি হয়ে দীর্ঘপথ ঘুরে যাওয়ার ঝামেলা দূর হয়ে যায়।

২০২৩ সালের শেষ অর্থবছরে পানামা খাল কর্তৃপক্ষ প্রায় ৫০০ কোটি ডলার আয় করেছে। এই আয় পানামা দেশের অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

যদিও ট্রাম্প এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেননি, তবে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বাইডেনের শাসনামলে তিনি তার নিজস্ব রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করছেন। ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের আবাসন খাতের অভিজ্ঞতা তাকে মার্কিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ রক্ষায় অত্যন্ত সক্ষম করেছে বলে দাবি করেন।

পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ট্রাম্পের এসব বক্তব্য একদিকে যেমন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও শক্তির কেন্দ্র হিসেবে পানামার অবস্থানকে নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে, তেমনি এটি মার্কিন সরকারের পরবর্তী নীতি ও সমর কৌশলের প্রতি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টি করেছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : News Upload

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ